02 April 2017

কবিতা

আমি সে রাস্তায় একলা হাঁটি
সে রাস্তায় ওপাশে ঘন জঙ্গল
সে জঙ্গলেও আমি একলা হাঁটি
সে জঙ্গলের প্রতিটি গাছ, ঘাস,
পরজীবী লতা আমার পরিচিত
সে জঙ্গলের ফুল ফল,
ঝুলে থেকে সূর্য আমার পরিচিত
সব পরিচিত অভিজ্ঞতাগুলোর মাঝে...
একটি অপরিচিত কূপ
দেবতা বলেন- কূপটিও তোমার পরিচিত
তবে সে বড় দুর্বোধ্য অভিজ্ঞতা

আমি পরিচিত জঙ্গলের
পাতা কুড়াই, সাজাই
দেবতা বলেন- হয়নি
জঙ্গলের পরিচিত গাছেদের
ফুল কুড়াই, সাজাই
দেবতা বলেন- হয়নি

আমি বলি- কিসে হবে?
দেবতা বলেন- দুর্বোধ্য অভিজ্ঞতায়
যে কূপ আজ উন্মোচিত হলো...
সে কূপের জল দেবে বর
তারপর চঞ্চলকে তুমি দেবে স্থিতি
সে স্থিতিই প্রকাশিত হবে
সে স্থিতিকেই তুমি সাজিয়ে তুলবে
আমি বলি- এতো অসম্ভব
দেবতা বলেন- দুর্বোধ্যকে তুমি দেবে বোধ্যতা
আর প্রকাশিত হবে, সমস্ত অভিজ্ঞতা

তারপর থেকে আমি রোজ তাই,
খোঁজ করি, কূপের পাড়ে
এখানে, ওখানে, সবখানে...
ক্লান্ত আমি চোখ বুজে রই
দেবতা বলেন- কূপের ভেতরে

তাকাতে ভয় হয় আমি...
আমাকেই দেখি দেখি...
এই কি বর তবে?

একেই তুমি সাজাবে, তোমার মতো করে
যদি এভাবে না সাজাও, যেভাবে...
তারপরও তুমি স্ব-অধীন হও...
সাধ্যের সীমানায় তুমি বসবাস করো

আমার অভিজ্ঞতাগুলো হারাতে থাকে
জমতে থাকে বিস্মৃতির পাতায়
আমি যদি আরো সমৃদ্ধ হয়ে, তারপর...
ক্রমে হয়ে যাই নিঃস্ব!

নিঃস্বতাকেই সম্বল করে বাঁচতে শিখি
অভিজ্ঞতাগুলো কোনো মানে দেয় না
কোনো পুরাতন পথকে রঙিন করে না
যা ছিলো, তাই থাকে
হিসেব করে দেখা যায়...
আগের রাস্তাতেই আছি
সেই আগের জঙ্গলে

দেবতা বলেন- তুমি নও
আমি বলি- আমাকে শেখাও

সমস্ত সরঞ্জাম বাস করে...
তোমার অভ্যন্তরে
আমি বলি- সে তো পুরাতন
দেবতা বলেন- পুরাতনরা নতুন হয়,
নতুনরা পুরাতন

চিত্ত চঞ্চল হয়
ঝুলে থাকা সূর্যটি আলো দেয়
ঠিকমতো তারপরও
পাতারা সবুজ হয়...
ফুলেরা ফোটে...
সবাই যেনো পরস্পর
হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে
দেবতা বলেন- তুমিও

আমিও অংশ হই...
তারা আমার পরিচিতই
হাত বাড়িয়ে নেবার পর...
কূপের পাশে বসি
ভেতরে তাকিয়ে দেখি- আমি
দেবতা বলেন- সবাই

আমি কূপের ভেতর থেকে তুলি
দেবতা বলেন- হয়নি
আরো ভেতর থেকে তুলি
দেবতা বলেন- হয়নি
আমি কূপের গভীর থেকে তুলি
দেবতা বলেন- হয়নি
আরো গভীর থেকে তুলি
দেবতা বলেন- হবে...
এবার কবিতা হবে

২৫.০৭.২০১২


No comments: