তার
আগে প্রয়োজন দীর্ঘ প্রস্তুতির।
কথা
আসবে আত্মশুদ্ধির।
জানি
না, আমার আত্মা শুদ্ধ কিনা!
অথবা
কোন দিক হয়ে বসেছি?
পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষণি,
চারদিক, দশদিক বা সবদিক,
আমার
কাছে নিজদিক বলে বিবেচিত।
আকাশে
তাকাতে ভয় হয়।
আকাশ
সবুজাভ দেখি।
লোকে
বলে, আমি নাকি বর্ণান্ধ।
আকাশ
আমার কাছে মায়ার মতো।
মাটিতে
তাকাতে ভয় হয়।
মাটিতে
বিষ। হিংসা, অহংকার,
পাপ।
লোক
দেখানো পূণ্যের পদছাপ।
কোনো
বোধিবৃক্ষ নেই। পাইনি।
পাইনি
কোনো প্রবাহিত পবিত্র গঙ্গা।
এখনো
করিনি কোনো কেবলা ঠিক।
তবু
করতে চাই স্তুতি। কিভাবে?
কার
স্তুতি করবো ঠিক করা প্রয়োজন।
স্তুতি
কি করবো এই বিশাল প্রকৃতির!
স্বচ্ছ-সবুজ, সুদৃঢ় বন্ধন আর নিয়তির।
নিয়ত
ঘুর্ণনে বিপর্যস্ত জীবনের?
অথবা
প্রকৃতির যে কোনো অংশকে,
যাদের
দেখতে পাই চোখের সামনে।
গাছের?
সুন্দর
গাছ! তার ডাল-পাতা-ফুল-ছায়া।
তার
কৃতকর্ম, সহিষ্ণুতা আর ধৈর্য্যরে?
তার
আত্মত্যাগ আর পরোপকারের?
নদীর?
প্রবাহমান
পানির ধারার? বয়ে চলে শুধু।
কোথায়
শুরু তার, কোথায় শেষ?
সে
জানে না। যেমন জানিনা আমরা নিজেরা।
শুধু
বয়ে চলাই ধর্ম নিষ্ঠার।
পাখির?
সন্তানবৎসল
পাখির? রঙীন পাখির?
পাখির
পালকের, পালকের রঙের।
রঙের
মাধুর্যে ম্লান, আর সব প্রজাতি।
তবে
কি পাখির? রঙীন পাখির!
ফুলের?
রূপের!
প্রাণের! সৌন্দর্যের!
পার্বনে
ছড়ানো হয়, দেবতার পায়।
প্রেমিকাদের
দেয় প্রেমিকেরা।
আলোর?
অন্ধকারের
সহোদর। অর্ধেক ওয়ারিশান।
যার
খোঁজে এতো এতো মহামানব,
এলেন
আর গেলেন আর খুঁজলেন।
সেই
আলোকেই তবে কি?
অন্ধকারের?
যাকে
ছাড়া অচল আলো।
লোভ-হিংসা, অহংকার আর স্বার্থ
করে
আলোর বিপরীতে প্রতিনিধিত্ব।
তবু
সব কাজে, মোহে আর মায়ায়,
কামে
আর চতুরতায়-
মানুষ
এরই সাথে থাকে।
চাঁদের?
স্নিগ্ধ-কোমল চাঁদের!
যার
নিজের মেরুদণ্ড ছিলো না কখনো।
আলোহীন
কোমল স্নিœগ্ধতা, স্তুতি নয়।
সূর্যের?
যে
আমাদের বাঁচিয়ে রাখে দিনের পর দিন
প্রজন্ম
থেকে প্রজন্ম আগ থেকে।
শীতের
বিপদে থাকে না অভাবীর পাশে।
আগুনের?
না
থাকলে চলে না। থাকলেও চলে না।
মানুষের
এগিয়ে যাবার প্রথম শর্ত।
অবুঝ, পুড়িয়ে পূত-সিদ্ধ করে সব।
তবুও
তার কাছে থাকতে চায় না কেউ।
বাতাসের?
দুরত্ব-চঞ্চল
বাতাসের!
দেখা
যায় না। ছোয়া যায় না।
শুধু
অনুভবে কি জীবন চলে?
তবে
কার?
প্রশ্নই
আছে শুধু। উত্তর আছে কি!
তবু
স্তুতি করতে হবে, এই প্রস্তুতি।
তবু
নাকি স্তুতি করতে হয়।
তাহলে
কি সেই সত্ত্বার?
যাকে
বোঝা যায় না। ধরা যায় না।
যার
মর্জি ঠাউর করা যায় না।
কি
সে চায়, আর কি সে চায় না।
সময়ের?
বয়ে
চলে মাত্র। মূঢ়-অথর্ব।
কেবল
কেবলই একটি ধারনা
ধারনার
স্তুতি চলবে কি?
বর্তমানের?
তাতো
ধ্রুব নয়... একটি মূহুর্ত মাত্র।
কোনো
বিচ্ছিন্ন আলোকচ্ছটার মতো,
এই
অতীত, এই ভবিষ্যৎ।
অতীতের?
নিজের
আয়না মাত্র, নিজেকেই দেখা।
কি
হলো আর কি হলো না!
কি
পেলাম আর কি পেলাম না!
ভবিষ্যতের?
কিভাবে
সম্ভব? অধরা অনুভূতি...
আমাদেরতো
শুধু মনে হয়,
কি
হবে আর কি হবে না!
কি
পাবো আর কি পাবো না!
তবে
কার?
প্রশ্নই
আছে শুধু। উত্তর আছে কি!
তবু
স্তুতি করতে হবে, এই প্রস্তুতি।
তবু
নাকি স্তুতি করতে হয়।
তাহলে
কি অনুভূতির?
যাকে
বোঝা যায় না। ধরা যায় না।
যার
মর্জি ঠাউর করা যায় না।
কি
সে চায়, আর কি সে চায় না।
ভালো
লাগার?
এতো
এক সাময়িক বোধ। প্রায়ই লাগে।
আমাদের
মোহ, আমাদের টানে।
যে
কোনো কিছুতেই আমাদের ভালো লাগে।
মন্দ
লাগার?
প্রায়
এর চেয়েও বেশি লাগে।
আমাদের
ভেতর বসবাস করে।
আমাদের
গহীনে।
পূন্যে?
কিসে
পূণ্য? কিভাবে?
কেনো?
পাপের
বন্ধু, হাত ধরে হেটে চলে।
স্তুতিময়
সামাজিক আবেগ...
পাপে?
অনেক
আগেই নাকি তলিয়ে গেছে।
নিমজ্জিত
সবাই, কেউ কেউ ছাড়া।
সবাই
এতো ভয় পায়,
ভয়ে
ভয়ে কাছে যায়।
আবেগের?
এতো
বেশি স্তুতি কেউ পায় নি।
বহুদিন
বহুকাল। কোনোদিনই...
কতো
কালি, কতো রক্ত ঝরলো,
আজো
তবু অপ্রকাশিত থাকলো।
ভালোবাসার?
মানুষ
পাগল হয়, পাগল মানুষ হয়।
মানুষ
পশু হয়, পশুরা মানুষ হয়।
মানুষ
দেবতা হয়, দেবতারা মানুষ হয়।
ভালোবাসা
ছাড়া কি মানুষ, মানুষ রয়?
ভালোবাসা
ছাড়া কি মানুষ, মানুষ হয়?
সুখের?
মানুষ
পূজারী এর। নিয়তই স্তুতি গায়।
তবু
কি পাওয়া যায়? এতো সহজেই!
মানুষ
খুঁজতে থাকে, এখানে ওখানে...
স্বার্থে
সুখ, সুখেই স্বার্থ।
দুঃখের?
সবার
অন্তরপাত্র পূর্ণ এতে।
দুঃখ...
এতো দুঃখ, এতো দুঃখ...
সংসারে
নাকি দুঃখই কেবল।
তবে
কার?
প্রশ্নই
আছে শুধু। উত্তর আছে কি!
তবু
স্তুতি করতে হবে, এই প্রস্তুতি।
তবু
নাকি স্তুতি করতে হয়।
তাহলে
কি মাটির?
যে
মাটিতে আমরা জন্মাই
যে
মাটিতে আমরা ফিরে যাই
যে
মাটি আমাদের নাড়ির টান
আমরা
অচল এক মূহুর্তেই,
মাটিতে
ছাড়া, আমাদের পা।
প্রতিমার?
কোনো
মাটির পুতুলের?
আমাদের
মতোই মাটির তৈরী।
মাটিতেই
গড়ন, ভাঙন,
জীবন।
আমরা
ধরে নেই তারা শুনছে।
কাঠের?
একটির
উপর আরেকটি, আড়াআড়ি...
কি
হয় তাতে স্তুতি বা অস্তুতিতে?
আমাদের
জীবনটাইতো আড়াআড়ি,
কাঠের
টুকরোর মতো।
মহামানবের?
করা
গেলে যেতে পারে।
কে
আগে, সেটা আগে ঠিক করে...
তারা
কেউ আর শুধু মানব নয়।
কারন
তারা অনেক উপরে,
মহামানব
তারা, দেবতা পর্যায়ের...
তবে
তা তারা নিজেরা জানেন কিনা,
সন্দেহ
আজন্মের।
তবে
কার! তবে কার?
জ্ঞানের?
তাতো
নিজের নয়, কারো নয়।
শূন্যে
লীন হবে একদিন নিশ্চয়।
এতো
কুড়িয়ে পাওয়া সম্পদ...
যে
কুড়িয়ে পায়, তার।
স্বার্থের?
এতো
মানুষের প্রাচীন সহোদর।
এতো
মানুষের আদিম প্রবঞ্চনা।
রক্তে
মিশে আছে। রক্তেরও আগে...
দ্বন্দ্বের?
মন
যদি হয়, আকাশের ঘুড়ি...
স্তুতি
তবে হোক, দ্বন্দ্বের।
সূতোটা
ছিড়বে, না ছিড়বে না...
ছিড়লে
ভালো, না ভালো না...
ভালো
কি হবে, না হবে না...
আমাদের
গহীনেই বাস করে সে।
তবে
কার! তবে কার?
প্রশ্নই
আছে শুধু। উত্তর আছে কি!
তবু
স্তুতি করতে হবে, এই প্রস্তুতি।
তবু
নাকি স্তুতি করতে হয়।
আমারতো
স্তুতি করতে হবে।
আমার
স্তুতির তো সময় গেলো, গেলো...
প্রত্যাদেশ
এলো...
ভেতরে
তাকাও। দেখো নিজেকে।
নিজেকে
সমর্পন করো...
শুধুমাত্র
তোমার নিজেতে।
দেখো...
তুমি
একটি পূর্নাঙ্গ কবিতার মতো...
অদ্ভূত...
তাল-লয়... মাত্রা-ছন্দ।
তুমি
একটি পূর্নাঙ্গ বাহন...
আমি
তোমাতে আরোহন করি।
তুমি
পূর্নাঙ্গ জলধারা...
আমি
তোমাতে অবগাহন করি।
তাই
তুমি স্তুতিময়...
ধারন
করো নিজেকে, স্তুতিতে...
ধারন
করো স্তুতিময় সমস্ত বিষয়কে...
তুমি
নিজেই একটি পূর্নাঙ্গ স্তুতি।
স্তুতি
করো নিজেকে...
১৮.১১.২০১০
No comments:
Post a Comment