হয়তো সেও একদিন কোনো ভদ্রস্থ ঘরের বৌ হবার স্বপ্ন
দেখেছিলো...
তারও খুব ইচ্ছা ছিলো, আজান দিলে মাথায় ঘোমটা দেবার...
ইচ্ছা ছিলো... সকালে উঠে রোজ, বাসি উঠান ঝাটা দেবার।
অথবা সাংসারিক খুঁটিনাটিতে কাটবে তার সারাটা বিকাল।
তার নিজের বাচ্চা এসে কোলে বসবে...
তাকে খাইয়ে দাও, তাকে ঘুম পাড়াও, কতো জ্বালাতন...
এইসব জ্বালাতনের মিষ্টি স্বপ্নে বিভোর ছিলো সেও।
শাশুড়ি তারও হবে। হবে আর এক জন ছায়াদানকারিনী।
আগলে রাখবেন... ভুলগুলো শুধরে দেবেন মমতায়...
মাঝেমাঝেই স্বামীর সাথে ঝগড়া লাগবে তার...
রেগেমেগে বাপের বাড়ি যাওয়ার হুমকি দেবে সে।
শেষতক স্বামী তার বলবে- চলো আমিও যাবো...
প্রতি পার্বণে কাজ বেড়ে যাবে... আত্মীয়রা আসবে।
বলবে- দেখি বউ, মুরগি কেমন রাঁধতে পারো...
মেজাজ ভালো না থাকলে- দিলাম একটু ঝাল বাড়িয়ে...
আবার আসছে পার্বণে বাচ্চাদের সাথে নিয়ে
বাপের বাড়ি যাবে সে... সেখানে সবাই তার রক্ত।
কতো আনন্দ আর মায়া আর স্মৃতি সেখানে...
বাপের বাড়ি থেকে আসার পথে নিয়ে আসবে...
পাতিলভর্তি মুড়ি-চিড়া-খই, জীবন্ত কইমাছ, পিঠা,
শলার ঝাড়–, বাচ্চাদের কাপড়,
স্বামীর লুঙ্গি আর পিতার আদর...
দরোজায় টোকা পরতেই, সম্বিৎ ফিরলো তার...
ছি! আমি এইসব কি ভাবছি...
দরজায় খদ্দের দাঁড়িয়ে...
১২.০৪.২০১০
[শব্দসত্যসুন্দরম্/২০১৩]