27 April 2017

স্বপ্নগুলো সাদাকালো

হয়তো সেও একদিন কোনো ভদ্রস্থ ঘরের বৌ হবার স্বপ্ন দেখেছিলো...
তারও খুব ইচ্ছা ছিলো, আজান দিলে মাথায় ঘোমটা দেবার...
ইচ্ছা ছিলো... সকালে উঠে রোজ, বাসি উঠান ঝাটা দেবার।

অথবা সাংসারিক খুঁটিনাটিতে কাটবে তার সারাটা বিকাল।
তার নিজের বাচ্চা এসে কোলে বসবে...
তাকে খাইয়ে দাও, তাকে ঘুম পাড়াও, কতো জ্বালাতন...
এইসব জ্বালাতনের মিষ্টি স্বপ্নে বিভোর ছিলো সেও।
শাশুড়ি তারও হবে। হবে আর এক জন ছায়াদানকারিনী।
আগলে রাখবেন... ভুলগুলো শুধরে দেবেন মমতায়...
মাঝেমাঝেই স্বামীর সাথে ঝগড়া লাগবে তার...
রেগেমেগে বাপের বাড়ি যাওয়ার হুমকি দেবে সে।
শেষতক স্বামী তার বলবে- চলো আমিও যাবো...
প্রতি পার্বণে কাজ বেড়ে যাবে... আত্মীয়রা আসবে।
বলবে- দেখি বউ, মুরগি কেমন রাঁধতে পারো...
মেজাজ ভালো না থাকলে- দিলাম একটু ঝাল বাড়িয়ে...
আবার আসছে পার্বণে বাচ্চাদের সাথে নিয়ে
বাপের বাড়ি যাবে সে... সেখানে সবাই তার রক্ত।
কতো আনন্দ আর মায়া আর স্মৃতি সেখানে...
বাপের বাড়ি থেকে আসার পথে নিয়ে আসবে...
পাতিলভর্তি মুড়ি-চিড়া-খই, জীবন্ত কইমাছ, পিঠা,
শলার ঝাড়–, বাচ্চাদের কাপড়, স্বামীর লুঙ্গি আর পিতার আদর...

দরোজায় টোকা পরতেই, সম্বিৎ ফিরলো তার...
ছি! আমি এইসব কি ভাবছি...
দরজায় খদ্দের দাঁড়িয়ে...


১২.০৪.২০১০
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩]

26 April 2017

বিশ্রাম

আলো ছিলো... আলো নিভে গেলো... জগৎ জুড়ে নেমে এলো... এক অসম্ভব শূন্যতা... আমার চারপাশে... অন্ধকার চেপে এলো। আমি হাঁটছিলাম... এক অন্ধকার পথে... আমার দু’পাশের গাছেরাও অন্ধকারে... আমি তাদের পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি সামনে। অজানা গন্তব্যের দিকে... দেখি সামনে কিছু আলোকবিন্দু... তারা ছুটে চলেছে... তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে। আর আমি আলোহীন... কাউকে পেলাম না সঙ্গী... যে আমাকে সাথে নেবে... তার গন্তব্যে। আমার দিকে শত আলোকবিন্দু ছুটে এসেও... আবার আমাকে রেখে... ছাড়িয়ে চলে গেলো। আর আমি পথে... একলা... অন্ধকারে। তারপর আবার আলো এলো... আমি আলো দেখলাম।

পথে হাঁটলেই আলো... সে পথেই অন্ধকার।


০৫.১২.২০০৯
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩]

25 April 2017

মহামায়া

আমার স্বপ্নে আকাশ ছিলো,
বৃষ্টি ছিলো, ফুল ছিলো, মহামায়া।
আমার স্বপ্নে জোস্না ছিলো,
চাঁদ ছিলো, তার ঘ্র্রাণ ছিলো।
তুমি তাদের মায়া জাগাবে, মহামায়া।

হাতের পাশে তোমাকে পেয়ে একদিন
হয়ত সব ভুলে যাবো।
ভুলে যাবো সব বেদনা-অতীত।
ভুলে যাবো সব অতীত-দুঃখস্মৃতি।
সে স্বপ্নেই আমি আজো জেগে আছি। 
তোমাকে পাশে পেয়ে হয়ত,
সব স্বপ্নেরা আবার জাগবে।
সব পুরাতন পাপ আবার ফিরে আসবে
এবং ঘুমন্ত ইচ্ছারা জেগে উঠবে।

তুমি বলবে- চলো আকাশ দেখি।
জোসনায়, রৌদ্রে। হাত ধরে খোলা বাতাসে।
ছাতিম গাছের নিচে।
যে ছাতিম গাছের নিচে
আমরা মাতাল হই।

তুমি বলবে- আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামুক।
আর তাতে কদম ছড়াক রেণু।
আমাদের স্মৃতিকে ধারণ করে বুকে
সবগুলো কদম তাদের গন্ধ ছড়াক।

আর আমি তাতে ঢালবো রং।
একদিন সব শব্দনৈঃবদ্য
সাজিয়ে তোমার পায়ে রাখবো মহামায়া।
তুমি ফেরাতে পারবেনা চোখ।
তাকিয়ে থেকে থেকে শেষটায় ক্লান্ত হবে।
আমাকে আঁকড়ে ধরতে চাইবে।
আর আমি যদি হাত গলে পিছলে যাই-
আমার সব শব্দসম্পদ তোমার রইবে।
মহামায়া তুমি শব্দের দেবী হবে।

০৯.১০.২০০৯
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩]

24 April 2017

ধ্যান

এবং
অবশেষে
আমি আমার
প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে
পারার মতো পর্যাপ্ততায় পৌঁছলাম।
যে ছাতিম গাছে রোজ রাতে পাখি ডেকে
উঠে ফিরে যায় ফের ঘুমঘরে, কাতরতা স্নিগ্ধচোখে।
দুই পাখি সংসার সাজিয়ে বসে ছাতিমের ডালে ডালে ছোট্টটি।
সে ছাতিমের নিচে যে সরকারী বেদী, তার উপরে পরে থাকা মরা পাতা
ছাওয়া আর ঝাঁট না দেয়া। তারই খানিকটা হাত দিয়ে মুছে, হাত পা সাজিয়ে
দিনরাত চব্বিশঘন্টা বসবো। আর সারাটাক্ষণ তোমার ধ্যানে ধ্যানে
মগ্ন থেকে থেকে শেষকালে ছাতিমের মরে ঝরে
যাওয়া পাতাটির মতোই ঝরে যাবো।
তবু প্রতীক্ষায় থাকবো তুমি এবং
কেবল মাত্র তুমিই তা সাজিয়ে এনে
আমার হাতের কাছে রাখবে।
আর আমি এইটুকু
আশা নিয়ে
ঝরতে
চাই।




১৮.১১.২০০৯
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩]

23 April 2017

অনুভব

দেখো, চাঁদেরা পুরোপুরি উঠতে চায় না আকাশে। পাখিরা চায় না উড়তে ব্যোমে পুরোপুরি। তবু নক্ষত্রের ছোট্ট আলো, আলো ছড়ায় দিকেদিক সাধ্যমতো। তুমি আকাশ হও... আমি উড়ি তাতে... কোনো কৃপণতা ছাড়া। সকাল হয়, সূর্য ওঠে, পাখিরা আবার ব্যস্ত হয়, বাতাস বয়। শান্ত-স্নিগ্ধ-সুখি বাতাস। সে বাতাস বড় বিষণ্ন বাজে, যদি তুমি না দেখো... যখন তুমি কথা বলো না, সমস্ত শব্দরা মূঢ়-মূক-বধির হয়... তোমার গান না হলে মনে হয়, সকাল হয়নি এখনো... পাখিরা গাইছে না। তুমি থাকো পাশে। দেখো পাখিরা জীবিত হচ্ছে, গান গাইছে।

জানো, এই যন্ত্রণা উপলব্ধির উর্দ্ধে। তোমার কণ্ঠ না শুনে, আমি কিভাবে বাঁচি, আমাকে শিখাওতুমি কেবল আমাকে শিখিয়েছো অনুভূতির লেনদেনে সিক্ত হতে। শিখাওনি...

যখন ঘুমন্ত থাকি, তখন তুমি স্বপ্নে আসো। স্বপ্নের সবুজ ঘাসে তুমি হাঁটো। তোমার খোলাচুল নীল মনে হয়... আকাশের সাথে মিশে। সবুজ ঘাসের ছায়ায় যার মিষ্টি ছায়া পরে। তাই ঘুমাইনা... জেগে থাকি। যখন জেগে থাকি... তখন ভাসি কল্পনায়। তুমি তোমার ক্লান্ত চুল ছড়াচ্ছো... আমি দেখি। কি অসম্ভব টান আমাকে টানে। তোমার চুল... সে মহার্ঘ্য বস্তু। আরাধ্য তোমার চোখ... তার লক্ষ্মী চাহনি।

আমি শুধু তাকাই তার দিকে। কী অসম্ভব ভালো লাগা... আমার মধ্যে জেগে উঠে। বহু দিন পর জাগে চর... স্রোতে। আমি আমার মধ্যে হারাই। আমাকে খুঁজতে গিয়ে দেখি... সেখানে তুমি। তুমিই কি আমি?

জানি না... জানতেও চাই না। শুধু জানি এইটুক... আমার অস্তিত্বের অনুভবে থাক... জীবন্ত তোমার পদছাপ।

০২.১০.২০১০
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩] 


22 April 2017

অনুধাবন

মিথ্যায় মিথ্যা জন্ম নেয়। মিথ্যায় মিথ্যা বাঁচে। সত্যে মিথ্যারা মৃত হয়।
জীবন তো সামান্য... অতি সামান্য... পুতুলের মতো।
এক মিথ্যা মদদ দেয় অন্য মিথ্যাদের। মিথ্যারা সর্বেসর্বা হয়।
সত্য কোণঠাসা হয়। দুর্বল হয়, মৃতপ্রায় হয়।
পুনর্জীবন পায়... সত্যে। আরো সত্যে। আবারো সত্যে।

নিজেকে সমর্পণ করো।
সময় এবং প্রকৃতিতে।
সময় তোমাকে নিয়ে যাবে।
সে যেখানে নিয়ে যেতে চায়।
প্রকৃতি তোমাকে পৌঁছে দেবে।
যেখানে সে তোমাকে দেখতে চায়।
তোমাকে এবং তোমাদেরকে...
এবং আরো তোমাদেরকে।
মানুষ তো এক জীবন্ত অনুষঙ্গ মাত্র।
মিথ্যার আশ্রয়ে পায় উষ্ণ ওম, ঘর শান্তির।
নিজেকে দেখতে চাও... স্রোতে। দেখো-
তুমি নিশ্চয় পৌঁছে যাবে।
তোমার নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
যা কেউ জানে না...


০৫.০১.২০১১
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩] 

21 April 2017

বৃষ্টিঃ আশির্বাদ ও অভিশাপ

ঈশ্বর তার সমস্ত পানিপাত্র উপুর করে দিয়েছেন।
উজাড় করে দিয়েছেন, সব সাধনা তার সৃষ্টির তরে।
ভাবলেন মাথা গরম সৃষ্টি তার, প্রায়ই রেগে যায়।
রেগে মেগে ঈশ্বরকেও গাল দিতে ছাড়ে না।
উপর থেকে পানি ফেলে যদি রাগ কমানো যায়।

ঈশ্বর তার সমস্ত পানিপাত্র উপুর করে দিয়েছেন।
ভেবেছেন সহজ সমাধান হবে তার সৃষ্টির।
পানি টাকি আশির্বাদ না অভিশাপ হয়ে এলো?
পল্টনের মোড়ে একজন ভিক্ষুক তার পরিবার সহ,
একটা ছিঁড়া পলিথিনের নিচে, মাথা গুঁজে।
ঈশ্বরের আশির্বাদ গ্রহনের স্বামর্থ তার নাই।

ঈশ্বর তার সমস্ত পানিপাত্র উপুর করে দিয়েছেন।
কমলাপুরের বস্তিতে শোরগোল পরে গেছে।
ঈশ্বরের আশির্বাদ তারাও নিতে পারল না।
এদিকে পাতিল ধরে তো ওদিকে পাতিল পরে।
গ্রীষ্মকালে জমে থাকা ময়লার স্তুপ থেকে
গন্ধ বেরোয়। বুঝতে পারেনা কোনটা আশির্বাদ!
পরিত্যক্ত বোতলে লাথি মেরে খেলে ফুটবল।

ঈশ্বর তার সমস্ত পানিপাত্র উপুর করে দিয়েছেন।
ঝর ঝর করে পানি ভেঙে পরতে লাগলো।
যে শ্রমিক আজ, কালকের চাল কিনে নাই্,
যার চারটা পিচ্চি সমেত পরিবার, বৌ বেকার।
জানালা দিয়ে উদাস চোখে, একবার রাস্তা দেখে।
আরেকবার আকাশের দিকে তাকায়। কি ভাবে?
যদি ঈশ্বরকে দেখা যেতো, সে বলতো- ‘ঈশ্বর
                পানি নয়, চাল দাও। ঈশ্বর।’

ঈশ্বর তার সমস্ত পানিপাত্র উপুর করে দিয়েছেন।
পানি প্রবাহ চাই মাঠের জন্য। নতুন বীজ।
কৃষক নতুন বীজ লাগিয়ে আকাশের দিকে তাকায়।
ঈশ্বর তার মনের কথা বুঝলেন, রাখলেন।
উপুর করে দিলেন পানিপাত্র। ভেসে গেলো।
সব কিছু ভেসে গেলো। মাঠ খাল বীজ।
মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলো সৃষ্টি তার।
এতো পানিতো চাই নাই ঈশ্বর। হায় ঈশ্বর।
আর মাত্র পনের দিন লাগতো, ফসল ঘরে তুলতাম।

ঈশ্বর তার সমস্ত পানিপাত্র উপুর করে দিয়েছেন।
উপুর করে দিলেন। উপুর করে দিলেন।
সব ভেসে যাক। তার সৃষ্টি, অনাসৃষ্টি সব যাক।
সব কিছু ধুয়ে মুছে, চলে যাক অজানায়।
সব, সব কিছু ধুয়ে যাক। সব কিছু ।
কৃষক, শ্রমিক, ভিক্ষুক, পথচারী সব কিছু ।
সব ধুয়ে যাক। সব মুছে যাক। ঈশ্বর।
ঈশ্বর তো তাদের নন। তারা ঈশ্বরের নয়।
ঈশ্বর কার? কবির! ধনীর!! প্রেমিকের!!!

ঈশ্বরের পানিদানে যারা মুগ্ধ হতে পারে না,
যারা কবিতা লিখতে পারে না, যারা গান গায় না।
যারা বলে না,- ‘বাহ্ বৃষ্টি! বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে।’
শুনে রাখো, তাদের জন্য এ বৃষ্টি।
ঈশ্বর তার পানিপাত্র উপুর করে দিলেন।


৩১.০৭.২০০৯
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০]

20 April 2017

বিষতো আমিও খেতে পারতাম

যখন বসন্তের বাতাসকে বিষাক্ত মনে হবে,
যখন মনে হবে বৃষ্টির শব্দের চেয়ে এই পৃথিবীতে
নোংরা কিছু নেই।
সমস্ত বন্ধন ছিন্ন করে তখন,
ঐ কালো চাঁদটার দিকে হাত বাড়িয়ে
আমিও তো বিষ খেতে পারতাম।

যখন মনে হবে নিরঞ্জন মহাপ্রভু
নিরন্তর ধোঁকা দিয়ে চলেছেন তার সৃষ্টিকে।
নিষিদ্ধ বিষবাষ্পে ভরে রেখেছেন চাঁদের অভ্যন্তর।
ভালো-খারাপ, পাপ-পূন্যের সহজ সমীকরন ভুলে,
আমিও তো বিষ খেতে পারতাম।

শিক্ষা হয়নি যখন হাওয়ার ঘটনায়,
তবু বারবার ভালোবাসা চাই।
সাপের কূটপূর্ণ হৃদয় হতে নির্গত হোক তবু।
সেই ভালোবাসা হৃদয়ে ধারন করে,
আমিও তো বিষ খেতে পারতাম।

সবুজ পৃথিবীকে যখন অন্ধকার মনে হবে,
সভ্যতার দিকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে,
আমিও তো বিষ খেতে পারতাম।

যদিও শ্যামল পরিনত হবে ধূসর প্রান্তরে।
যে প্রান্তরে আর কোনো মন চরবেনা।
আর কোনো স্মৃতির দায়ভার নেবে না।

তুই কেন্ ধূসর হবি রে শ্যামল প্রান্তর,
বিষতো আমিও খেতে পারতাম।


১৬.০৪.২০০৯
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০] 

19 April 2017

জাগো বাঙালী

নাকে তেল দিয়ে ঘুমাও বাঙালী,
তোমাদের তেল, তোমাদের গ্যাস
ওপারে গিয়ে হয় নিঃশেষ।
তবু তোমরা করো দলাদলি।

কে মুজিবসেনা, কে জিয়াবাহিনী,
এসব নিয়ে নয় আর কাহিনী।
এবার দেশকে বাঁচাতে হবে।
দেশের স্বার্থে কে আছো তবে?
দেশের কাছে এসে, দেশকে ভালোবেসে,
দেশের সন্তানেরে তুলে নাও তবে কোলে।
সকল দ্বিধা বিভেদ ভুলে,
কষ্টগুলো মাথায় নাও হেসে।

জেনো আসছে সুদিন সামনে,
হও দেশের জন্য নিবেদিত প্রান,
অতন্দ্র প্রহরী খোলা দুই কান,
এছাড়া সুদিন আসবে তবে কেমনে?

আমাদের দেশে তেলগ্যাসপানি,
ম্পদ নয় প্রান বলে মানি।
তেলগ্যাসপানি নিতে আসবে,
শক্ত একটা লড়াই হবে।
                প্রান দেবো প্রান, তবু গ্যাস নয়।
                এর শেষ তো এখানেই নয়।

আবার একটা সংগ্রাম হবে।
সে সংগ্রামে তরুন জিতবে।
কাটিয়ে অসুখ-মৃত্যু-জরা,
আনবে একটি সুন্দর ধরা।
সারা পৃথিবীকে বাজাতে হবে তালি।
                সময় হয়েছে ঘুম থেকে জাগো।
                                জোড় কদমে সামনে আগো,
হে বাঙালী।     


২১.০৫.২০০৭
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০] 

18 April 2017

ইচ্ছে

যদি পরজন্মে ঈশ্বর কখনো ডেকে তুলেন আমায়,
অগ্নিকন্ঠে বলেন- ‘হারামী পূনর্সৃষ্টিতে কি হতে চাস?’
আমার চোখের সামনে ভাসবে তোমার চোখ।
ততোধিক মোলায়েম কন্ঠে বলব, ‘মহাপ্রভু’!
হে মহাপ্রভু, আমার পূর্ববতী সকল ভাল বা খারাপ
বা ভালো ও খারাপ তুমি সমান দুই ভাগ করো।
সে সমান দুই ভাগ দিয়ে তুমি আবার বানাও
নীল দুই চোখ। সেই চোখ দুটি, তুমি তারে দাও।
হয়ত আমি মিলিয়ে যাবো অতল অন্ধকারে
আমার সমস্ত হয়ে থাক নীল দুটি চোখ।

একটা বজ্রপাত হবে।
ঈশ্বর গর্জন করে বলবেন- ‘বদমাশ। কাব্য করস ?!’
বজ্রপাতের দিকে দৃকপাত করে দেখি মেঘমঞ্জরী।
মেঘ দেখে মনে পরে, তোমার চুল যেন উড়ছে আকাশে।
আমি বলবো- হে মহান প্রভু, হে জগৎসংসারের ত্রাতা,
তুমি আমায় মেঘ বানাও। পেঁজা তুলার মতো।
অসম্ভব সাদা আর সুগন্ধী। তারপর সে মেঘআমি কে,
পাঠাও আবার ওই খোলা চুলে। যে চুল দেখে,
সন্ধ্যা সহসাই সকাল হত। আর সকাল থাকত মেঘলা।
আমি মেঘের মতো উড়তে চাই পূর্ববর্তীর চুলে।

গতজন্মে তোমার কিছু ভুলের জন্য ও,
প্রায়সই আমার চোখের আড়াল হতো।
এবারে এমন করো প্রভু, যেনো আমাকে
ছুঁড়ে ফেলতে চাইলেও আমি থাকব ওরই হয়ে।
আমাকে বাদ দিতে চাইলেও আমি আবার হবো।
আমাকে ছাড়া ও হবে একটা শাকচুন্নি ডাইনি।

প্রভু, নিঃসংকোচে প্রকাশিত হও, নিঃস্ব মাঝে বারবার।   

০১.০৪.২০০৯
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০]