10 October 2019

জাল


আমরা সবাই আটকে গেছি জালে।
আর আমাদের নিয়ে,
এক আটপাধারী খেলে।

বিষাক্ত তার শরীর থেকে আঁশটে গন্ধ হয়।
আঁশটে গন্ধে ভক্তি জাগে,
জাগে শ্রদ্ধা ভয়।

আমাদের তিনি নাচান ঘুড়ান জিইয়ে রাখেন জারে।
আমরা কেবল বেঁচেই থাকি,
মৃত্যুর দ্বারে দ্বারে।

আমাদের দিয়ে ভরবেন তিনি বিশাল দুটি পাত্র।
তিনি আটপাধারী সর্বেসর্বা,
আমরা পতঙ্গ মাত্র।

আমাদের নিয়ে খেলবেন তিনি,
     আশু প্রতিকার চাই।
          আশু প্রতিকার, ওরে তবেরে...
               আশু প্রতিকার নাই।

১৮.০৭.২০১০

09 October 2019

এই ব্যথা ভয়


যে থাকে থাকুক এই অসুস্থ নগরে!

আমি নই...
আর এর সাথী।
হারানো ফুলের মতো...
আমি শুধু একজনই হারাবো।
এ নগর হতে অন্য কোথাও।
যেখানে থাকবে না কোনো...
ব্যথা ভয়... অমূলক।

তীব্র দহনযন্ত্রণা থেকে...
মুক্তির পথে অনুসন্ধিৎসু...
পথিক গোলকধাঁধায়...
ঘুরি অন্তহীন জীবন।
সুতরাং,
এই ব্যথা ভয় অমূলক।

২৩.১০.২০১০

08 October 2019

অবমূল্যায়ন প্রসঙ্গে


সাক্ষী সময়...
সাক্ষী সে সূর্য যে রোজ বিকেলে অস্ত গেলে সন্ধ্যা হয়...

তখনি, ঠিক তখনি...
আমাদের সমস্ত সত্ত¡া ভূলুণ্ঠিত হয়।
আমরা কোনো পাথরের চাইয়ের উপর বসে...
আর পাথরের চাই বলে উঠে-
তুমি যদি আমাকে প্রাণ দিতে প্রভু...
আর আমাকেও ভালোবাসতে...
আমি হয়তো অবমূল্যায়ন করতাম না।

আমি ভাবি,
আমার যদি সামর্থ্য থাকতো,
আমিও পাথরের চাইয়ের কাঁধে কাঁধ মেলাতাম।
অসহ্য সব যন্ত্রণা বহন করতাম একসাথে।
মূল্যায়ন বা অবমূল্যায়ন প্রসঙ্গে,
আমরা মূক ও বধির হই...
পাথরের চাইয়ের মতো।
পথের পাড়েই পরে থাকে যে।
শুপাড়ি গাছের ছায়ায়...
রোজ ঘুমোতে যায়।

১৬.০২.২০১০

07 October 2019

শুভ্রপ্রাতের স্বপ্ন


স্বপ্নলোকের অন্ধকারের গহীনকোনে বিচরন
তোমার স্নিগ্ধ দুনয়নে রাখবো আমার দুনয়ন
তোমার ওর্নার ফুলেল সাজে
                   আমার হৃদয়ে বেদনা বাজে
তবু বেদনা ভুলে যাবো করবো বাগান রিসৃজন

আমার হাত তোমার হাতে তোমার চোখে আনন্দন
দুজন সাধের সাথী হবো মহাজাগতিক বন্ধন
আশার মায়ায় ভুলি ব্যাথা
                   সুখদু:খের কইবো কথা
সারাজীবন পাশাপাশি আজীবন আর আমরন

তোমার ঠোট আমার ঠোটে আমার হৃদয় তোমাতে
দুজন মিলে যেতে চাই ঠিক মৃত্যুর আগমূহুর্তে
জীবম্মৃতের মাঝামাঝি
                   এসো দুজন স্বপ্ন সাজি
আবার দুজন মিলিত হই শান্ত-সুখী-শুভ্র প্রাতে

৩১.১০.২০০৯


06 October 2019

বৃষ্টি: আমি ও তুমি


আসো। হাত ধরো। একসাথে বৃষ্টিতে ভিজি। তোমার আমার সমস্ত চেতনা ধুয়ে যাক। মুছে যাক যত শোক গ্লানি হতাশা ইতিহাস। এমনি বৃষ্টির দিনে আমি আর তুমি একসাথে, একটি গাছের নিচে, বৃষ্টিতে ভিজতে না চাওয়ার পরও, বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম। বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম আমি, তুমি, গাছ, টিনের চালা, রাস্তা, বেঞ্চ। আর তুমি বললা- হুত বৃষ্টি।আমি বললাম- বাহ্ বৃষ্টি।তারপর কিন্তু আমরা দুজনেই বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম। ঝমঝম, ঝমঝম, ঝম। একটানা বৃষ্টির শব্দে আবার মাথায় ভোঁতা যন্ত্রনা। আমরা আবার রাস্তায় বেরুলাম। বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাস। তুমি বললে- শীত করছে।আমি তোমাকে দুহাতে আঁকড়ে ধরলাম। ধরনী যেভাবে সমস্ত সৃষ্টিকে ধরে রাখে। এভাবেই হয়ত, চিরকাল ধরে রাখতে চেয়েছিলাম। বৃষ্টিতে তুমি চুপসে গেলে। ঈশ্বরের সৃষ্টি তোমার প্রতিটি ভাঁজ স্পষ্ট প্রতিয়মান হলো। তুমি পিছলে গেলে।

তখনো বৃষ্টি। একটানা ঝুমঝুম, ঝুমঝুম, ঝুম। তিনটি কদম কিনেছিলাম। একটা নষ্ট হলো। তোমাকে দেবো। বৃষ্টি ছিলো। একটানা। তুমি খোঁপা টানটান করে নেমে এলে। বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি। ছিটকে ছিটকে আসছে। ঝপঝপ রিক্সা। একটা গাছের নিচে বেঞ্চে। আমি-তুমি। কদম হাতে পাওয়ার পর তুমি উদ্বেলিত। তোমার উচ্ছাস ছাপিয়ে গেলো বৃষ্টির শব্দ। ঝমঝমঝুমঝুম। আমি বললাম- কদম ভালোবাসি।আর তুমিও। আমরা দুজনেই কদমফুল ভালোবাসলাম। আর বৃষ্টির শব্দ, সব কিছু ছাপিয়ে আমাদের কাছে মধুময় হলো। তুমি বললে- বৃষ্টি এতো ভালো কেনো?’ আর তুমি। বৃষ্টির পর বৃষ্টি হচ্ছে। ঝুমঝুমঝুমঝুম। আমি-তুমি একসাথে, কদমফুল হাতে। 

২৮.০৭.২০০৯

05 October 2019

প্রতিভাস


দীর্ঘক্ষন তার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি
যেনো আলো জ্বলছে অবিরাম।
যে আলোয় আমরা পথ দেখি।
নীরবে যে আলো আমাদের মনে আশার সঞ্চার করে।
আমরা পথ চলতে চলতে দেখি হঠাৎ,
ঠিক মতো আছে কিনা আলো।
যে আলোয় আমরা মাতাল হই।
চোখ ঠিকরে যেনো আলো ঝরে পরে।
যে আলোয় স্বপ্ন শিখি।

সে আলোর সন্ধানেই আছি আজো।
আজো কোনো আলো নাই। পাই নাই।
কোনো চোখ বলে নাই,
আসো আমার আলোয় পথ চলো।
আমার চোখে স্বপ্ন সাজাও।

২৬.০২.২০০৯ 


04 October 2019

ক্যাফেটেরিয়ায়


এই উচ্ছাস, এই উচ্ছলতা
ঠিক এসে থমকে যায়,
যখন তোমাকে দেখি না
ক্যাফেটেরিয়ার বারান্দায়।

          সবাই হাস্যোজ্জ্বল
          আনমনে কাটলেট চিবায়,
          আর আমি দু:খের বসত গড়ি
          ক্যাফেটেরিয়ার বারান্দায়।

অবিন্যস্ত কোকের বোতল
ছড়িয়ে আছে টেবিল জুড়ে,
আমার অবিন্যস্ত চুল অবিন্যস্ত ভুল
ক্যাফেটেরিয়া থেকে দুরে।
          ক্যাফেটেরিয়া থেকে দুরে।
                   ক্যাফেটে...

প্লাবন কে, যার অন্তর ভর্তি দু:খ।

০৩.০৮.২০০৯

03 October 2019

একটা স্লোগান দিতে চাই


একটা স্লোগান দিতে চাই।
ঈশ্বরের তথ্ত উল্টে যাবে।
ঈশ্বর তার সর্বস্ব সম্পদ ন্যাংটি খুলে ফেলে পালাবে।
সে স্লোগান ছায়া দেবে।
ছাতা হবে নি:ছায়া মানুষের মাথার উপর।
ঈশ্বরের রোষানল বজ্রপাত বারবার ফিরে যাবে।

একটা স্লোগান দিতে চাই।
সব ইট-রড-কংক্রিট ভেঙে পরবে।
নতুন করে জাগবে মানুষ।
নিজেরা জাগবে এবং জাগাবে।
রাস্তায় মানুষের ঢল, স্লোগানে মুখরিত রাস্তা।

একটা স্লোগান দিতে চাই।
আর খুরিয়ে চলতে হবেনা।
নিজের পায়ে দাঁড়াবো, হাঁটবো, দৌড়াবো।
সারা পৃথিবী কাঁপবে, দেখবে, অনুভব করবে।
চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে একদিন
ঘরে ফিরবো।
পরের দিনই তো নতুন সূর্য।

একটা স্লোগান দিতে চাই।
চশমা সহ ও চশমা ছাড়া সমান হবে।
সাদাকালো ও রঙিন চশমা সমান হবে।
রিমসহ ও রিমছাড়া চশমা সমান হবে।

একটা স্লোগান দিতে চাই।
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত।
আকাশের দিকে চোখ এবং আঙুল তুলে,
কন্ঠ কাঁপিয়ে স্লোগান দিতে চাই।
আরেকবার সুযোগ দাও।

একটা স্লোগান দিতে চাই।

০৪.০৭.২০০৯

02 October 2019

অব্যক্ত


আমরা হাঁটি এবং হাঁটি।
সহজ সরল রাস্তা থেকে
বন্ধুর বৃক্ষবহুল রাস্তা।
দেখতে দেখতে হাসি
সেই মেয়েটির যে
কেবলই হাসে এবং হাসে।
হাসতে হাসতে সে গড়িয়ে পড়ে
শব্দঝংকার যে ঝরে পড়ে
তারপর আমরা বিস্মৃত হই।
আমরা গাছ দেখি।
ফুল এবং পাখি দেখি।
হাসি দেখি এবং হাসি।
সেই মেয়েটি, শুধু হাসে।
মেয়েটি হাসে এবং হাঁটে।
অন্ধকারে তার ছায়া
আবেগসঞ্চার করে।
অথবা মুগ্ধতার সীমায়
পৌছে আমরা মানুষ হই।
আবার, আমরা হাঁটি।
আমরা হাঁটতে হাঁটতে
মুগ্ধ হই এবং তারপর,
আবার আমরা ছায়া দেখি।
আবার কষ্ট পাই।
হাসি এবং কষ্ট।
একসাথে পাওয়ার চেষ্টা।
আমরা হাঁটি এবং হাঁটি।
চাঁদের আলোয় যে
রূপ ছলকে উঠে,
মেয়েটির তাই কিন্তু
আমাদের শব্দশূন্য করে।
অথবা জ্বলজ্বল করে
জ্বলতে থাকা তারাদের
মতো। জ্বলে থাকে
হৃদয়ে অথবা হাসিতে।
শুধুই জ্বলে থাকে।
সকাল এলেই যাকে
আর দেখা যায় না।
অথবা দেখতে
চায় না কেউ।
সেই সূর্য ছেড়ে
তারা বা চাঁদ কেউ
দেখে না।
কিন্তু তখনও
জ্বলজ্বল করে হাসি।
হ্যা সেই মেয়েটির হাসি।
যা আমাদের উদ্বেলিত করে।
ঝনঝন করে ভেঙে পরা
কাঁচের মতো শব্দ।
পাশে কোন ট্রাক
এবং তার শব্দ ছাপিয়ে
যে হাসি আমরা শুনি।
শুনি এবং উদ্বেলিত হই।
আমরা শুনি হাসি।
যে হাসি ছলকে পড়ে
রোজ রাতে চাঁদ বা তারার
মতই, বা জোছনার মতো।
হাসি শুনে আমরা ক্লান্ত হইনা।
হাসি এবং হাঁটি।
হাঁটি এবং হাসি।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা
ক্লান্ত হই। কিন্তু
সেই হাসি, সেই শব্দ
ঝনঝন করে আমাদের কানে।
                                                       
১২.০২.২০০৯