19 February 2017

অনুভূতিনামা ২

সংকটাপন্ন অস্তিত্বের প্রশ্নে আপসহীন সবে,
রাত শীঘ্র ফুরিয়ে ফুটবে দিনের আলো অবশ্য।
কর্মপরিধির শেষ সময় আজ রাত টুকুই-
কাল দিনে সময় পাবে না, ধরবে জড়া আলস্য।

[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩]

ব্যঞ্জনা

দুঃখনিশুতি রাত্তি বেলা
তোমার আমার যাত্রা দেবার কথা ছিলো।

তোমার যতো বেসাতি সব
ছাড়বে তুমি আমার তরে।
থরে থরে সাজিয়ে রাখবো সুখ।

দুঃখের যে শেষ প্রান্তে
ভাবেরও ব্যঞ্জনা
তাতে আমি আর তুমি গড়বো
দুঃখেরও এক বসত।

সুখের হাসি দেখতে চেয়ো না
দুঃখের সাথে দোস্তি তার।
সুখের ছোঁয়া পাইতে গেলে
দুঃখ পাইতে হয়।

তুমি এতো দূরে যে
সুখদুঃখ থেকেই দূরে।

০৩.০৯.২০০৯
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩]

18 February 2017

স্তম্ভ

কবি,
দিব্যে দৃষ্টি দাও।
দেখো সেখানে আছে একটি স্তম্ভ।
সে স্তম্ভ একদিন ভেঙে পরবে নিশ্চয়।
তারপর তার ছায়ায় আশ্রিত কুকুরেরা,
স্তম্ভচাপায় মৃত কঙ্কালে পরিণত হবে।
দুইটি সভ্যতার সংঘাত অনিবার্য।

দেখো একটি স্তম্ভ ভেঙে পরেছে।
সেখানে আরেকটি স্তম্ভ দাঁড়িয়েছে।
আর সব নিরপরাধ নিষ্পেষিত
বিপ্লবীরা দ্বিতীয় স্তম্ভের নিচে,
জড়ো হচ্ছে।
মানবতা খুঁজে পাবে তার দরজা।
সুতরাং দেখো স্তম্ভের পতন এবং
দ্বিতীয় স্তম্ভের কারুকাজ।

১০.০৮.২০১০
[শব্দসত্যসুন্দরম্‌/২০১৩]

17 February 2017

প্রশ্ন

অন্ধকার এবং আলো
পাশাপাশি একসাথে বহুদিন।
বহুদিন তারা পাশাপাশি।
যখন ঈশ্বর বললেন- হও,
তখন কোনটা আগে হয়েছিলো জানিনা।
আলো নাকি অন্ধকার।
অথবা তারা যমজ সন্তান।
ঈশ্বর ভাবলেন- শুধু অন্ধকার হোক।
কিন্তু আলোও জন্মে গেলো।
অথবা ভাবলেন- আলো হোক।
কিন্তু অন্ধকারটাও জন্মে গেলো।

যাই হোক, হয়তো ঈশ্বর চেয়েছিলেন।
অথবা চাননি। হয়ে গেছে এমনি।
আলো এবং অন্ধকার।
আলো চারপাশে অন্ধকার।
অন্ধকারের ভেতর আলো।
পাশাপাশি একসাথে বহুদিন।

২৯.০৯.২০০৯
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০]

16 February 2017

অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা

কাকে আমি বলি স্বাধীনতা?

আমার দেশের মেয়েরা কি কামিজ পরবে,
ঠিক করে দেয় বলিউড।
আমার দেশের চিনির দাম,
বিশ নাকি একশ বিশ,
ঠিক করে দেয় দিল্লী।
দিনাজপুরে চাল চাষ হবে কিনা,
ঠিক করে দেয় ফারাক্কা।

কি চুক্তি হবে নাইকোর সাথে?
দক্ষিণ তালপট্টি কার?
নারিকেল জিঞ্জিরাতে মার্কিন নৌ ছাউনী বসবে কিনা?
আমাদের তেলগ্যাস কার ঘরে যাবে?

স্বাধীনতার আলামত!!

২৩.১২.২০০৮
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০]

15 February 2017

শুন্যশব্দ

অজানার পানে চেয়ে দেখো তুমি
অসীম শুন্যতা,
সে শুন্যতায় বাসা বাঁধে কিছু
আশা নিরাশার জাল,
সেই জাল কিছু পতঙ্গ ছিঁড়ে
কিছু কিছু আটকায়,
আটকানো সবে তড়পায় দেখো
সাক্ষী তিনটি কাল।
তিনটি কালের মিলন ঘটেছে
এইযে বর্তমান,
বর্তমানে রচে যাই শুধু
ব্যথার পর ব্যথা,
মহামহিম ও কোথায়গো তুমি
কোথায় তোমার রূপ?
বারবার দেখি বর্ণচ্ছটা
বাকি সব নিরাশায়।
এইযে হৃদয় গড়েছো তুমি
এটা কার অবদান?
তুমি কি জানোনা, তুমি ছাড়া হৃদি
শুধুই অন্ধকূপ।

১৪.০৬.২০০৯
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০]

14 February 2017

বৃক্ষ

বৃক্ষ যেমন আগলে রাখে ঘাস পাখি ফুল নদী
তেমনি করে আগলে আমায় রাখতে তুমি যদি
আমি ছাড়তাম নাগো মায়ার দুনিয়া ছাড়তাম না সংসার
তোমার ছায়ায় দেহ রেখে করতাম জীবন পার

যেমন করে নদী বহে বহে নিরবধি
পাহাড় হতে সাগর পানে বয়ে চলে যদি
আমিওতো ঝর্না থেকে নদী হতে চাই
আমা হতে তোমার পানে বয়ে যেতে চাই

পাখি যেমন বাসা বাঁধে করে ডাকাডাকি
সঙ্গী ছাড়া কেমন করে দুঃখ ভাগাভাগি
আমি তোমার সুখেদুঃখে পাখি হতে চাই
আমি পাখি তুমি পাখি সংসার সাজাই

২৩.১২.২০০৯
[এটি একটি কবিতার বই/২০১০]

13 February 2017

অনুভূতিনামা

অসম্ভবকে সম্ভব করো হে মুক্তচঞ্চল।
যদিও জেনো আকাশের নীল ভরবে বেদনায়।
যখন সকল আশা হারায়ে যাবে ঢেউয়ে,
তখনো সবাই যেনো তোমারেই খুঁজে পায়।

[এটি একটি কবিতার বই/২০১০]

12 February 2017

জনৈক নৈঃশব্দবতী

হে জনৈক নৈঃশব্দবতী,
এখন যান্ত্রিক যুগ। তাই হয়তো আর চিঠি দেয়া হয়না। শুধু কথা আর মেসেজ।
ভালো আছো...?

যে ফুলের মধু বেশি মিষ্টি, তার মৌমাছির অভাব হয়না।

না, না, না, হ্যা, হ্যা, হ্যা।
হ্যা, না, হ্যা, না, হ্যা, না।
না, হ্যা, না, হ্যা, না, হ্যা।

জান্নাত    জান্নাত    জান্নাত

হ্যা, হ্যা, হ্যা, না, না, না।
না, হ্যা, না, হ্যা, না, হ্যা।
হ্যা, না, হ্যা, না, হ্যা, না।

নাহয় অভাব মৌমাছির তার, মিষ্টি বেশি যে ফুলের।

আছো ভালো...?
মেসেজ আর কথা শুধু। হয়না দেয়া ছিঠি আর হয়তো তাই। যুগ এখন যান্ত্রিক।
জনৈক নৈঃশব্দবতী হে।

০৯.০১.২০০৯ 
[এতি একটি কবিতার বই/২০১০]