26 July 2017

হে মনুষ্যপ্রজাতি

- একটা হাত, মাথায় হাত বুলাক...
চাই। আফসোস!
নির্জন গহীনে কোনো হাত নাই।

- অতঃপর ঈশ্বর বলেন-
হে মনুষ্যপ্রজাতি,
তোমরা দাঁড়াইয়া রহিয়াছো এক চমৎকার যুগসন্ধিক্ষণে।
যেখানে সমস্ত আবেগ বিচার করা হইবে...
যুক্তি দিয়া।
যদিও আমি জানিতে অপারগ নহি...
তোমাদিগের আবেগ আমার আপন অস্তিত্বের মতোনই...
নিষ্কলুষ, পবিত্র।
তোমাদিগের আবেগ আমার সমস্ত সৃষ্টির মতোনই...
সুন্দর আর মনোমুগ্ধকর।
তোমাদিগের আবেগ আমার আদি চেতনার মতোনই...
শাশ্বত এবং চিরন্তন।
তবুওতো ভাবিতে হয়,
বিধি রহিয়াছো এই কঠিন পাথরে।

- আর আমাদের জন্যই এই বিধি।
তুমিতো একক-সম্পূর্ণ-খন্ডাংশহীন...
আমাদের প্রকাশের ভঙ্গী বলো তুমি...

- অতঃপর ঈশ্বর বলেন-
হে মনুষ্যপ্রজাতি,
তোমাদিগের প্রকাশভঙ্গী সম্পর্কে তোমরা নিজেরাই অবগত।
তোমাদিগের বহুপূর্বেই এই মীমাংসা হইয়াছে।
তোমরাতো কেবল সাক্ষী।
দাঁড়াইয়া রহিয়াছো একাকী পুরাতন;
পরস্পর মিশিয়া আছো শৈবালদের মতোন।
তোমাদিগের রহিয়াছে পূর্বতন অগ্রজ।
তাহারাও আমার প্রশ্নকারী ছিলো।
আমি তাহাদিগকে যাহা বলিয়াছি...
অদ্য কি তাহার ব্যতিক্রম হইবে?

- আমরা জানি, গোপন তোমার পছন্দ নয়।
তোমার সমস্ত পছন্দ প্রকাশিত...
সুরে-ছন্দে, রঙ্গে-গন্ধে...

- অতঃপর ঈশ্বর বলেন-
হে মনুষ্যপ্রজাতি,
পূর্বে যাহা বলিয়াছি, তাহাই বলিবো।
তোমাদিগের সত্ত্বা আমা হইতে পৃথক নহে।
উহাদিগের প্রকাশ ভিন্ন। ভিন্ন পাত্রে থাকিতে পারে।
উহারা আমার সত্ত্বার মতোনই... অতি বাস্তব।
আমার সত্ত্বার মতোনই উহারা অখণ্ডিত।
তোমাদিগের সত্ত্বা আমা হইতে পৃথক কিছু নহে।
উহারা পরস্পর সম্পূরক।
মিলাইয়া দেখিলে দেখিবে, উহারা বিচ্ছিন্ন নহে।
উহারা একত্রিত থাকিয়া দ্যুতি ছড়াইতেছে।
ক্রমাগত আরো সত্যের মুখোমুখি হইবার...
প্রস্তুতি লইতেছে।

- তারপরো বিধান কেনো বিধি?
তারপরো কেনো আবেগ হয় ধূসর?
খোলা প্রান্তরের মতো শুষ্ক-নীরস!

- অতঃপর ঈশ্বর বলেন-
হে মনুষ্যপ্রজাতি,
একই রকম বাহির দেখিয়া তোমরা তোমাদিগে...
চিহ্নিত করো, বাছাই করো, বন্ধন করো।
তোমাদিগের মধ্যকার বিভেদটুকু ভেতরের।
আর ভেতরেই তোমরা অবস্থান করিয়া থাকো।
ইহা জানিয়া রাখিও...
আর সমস্ত সত্যের ন্যায়, এটাও সত্য যে...
তোমাদিগে আমি দিয়াছি ভেতর।
তোমরা তোমাদিগের ভেতরেই বসবাস করো...
তবে তোমরা আমাকে পাইবে।
তোমরা তোমাদিগের ভেতরে খুঁজিয়া দেখো...
তবে তোমরা পবিত্র হইবে।
তোমরা তোমাদিগের ভেতরে বন্ধ হও...
তবে তোমরা মুক্ত হইবে।
আর যাহারা এই বোধে আক্রান্ত না হইয়া,
বাহিরে অবস্থান করিবে...
তাহারা নিজেকেই হারাইবে।

- তবুতো বাহির থেকে যায়।
বাহির ছাড়া ভেতর আর ভেতর ছাড়া বাহির...
তুমিতো দাওনি।

- অতঃপর ঈশ্বর বলেন-
হে মনুষ্যপ্রজাতি,
আমি সকলকে বাহির দিয়াছি। রঙিন করিয়াছি।
তাহাদের সাজাইয়াছি আপন মাধুরীতে।
তোমাদিগে দিয়াছি একটু ভেতর।
যাহাতে তোমরা তোমাদিগে এবং সকলকে...
চিনিয়া লইতে সক্ষম হও।
তোমাদিগের ভেতরে রহিয়াছি- ‘স্বয়ং’।
আমাদিগের একত্রিত বসবাস।
তোমাদিগের মধ্যে যে বাহিরেই রহিয়া যাইবে,
সে হারাইবে তাহার আপনাকে।
অন্যদের মতোনই, যাহা ভূতপূর্বেও ঘটিয়াছে।
আর ভেতরে তাকাইয়া বুঝিতে পারিলে...
বিবাদের মিলন ঘটিবে।
এইভাবেই তোমরা প্রকাশিত হও।
যেমনটা এর আগেও হইয়াছে।

- আমাদের ভেতর ভর্তি কেবল কোমল আবেগ।
তারাতো স্রোতাস্বিনী নদীর মতো।
নিশ্ছিদ্র-গভীর-বহমান।

- অতঃপর ঈশ্বর বলেন-
হে মনুষ্যপ্রজাতি,
উহারাই সত্য। তোমরা উহাদের যত্ন নিয়ো।
যত্নে গভীর আরো গভীর হইয়া থাকে।
উহারাই আমার প্রকাশ।
তোমরা ভাবিয়া ব্যস্ত হইয়ো না।
তোমরা তোমাদিগে ত্যাগ করিলে,
আমার অবস্থান কিরূপে?
তোমাদিগের আবেগ, আমার আশ্রয়।
উহারা বৃদ্ধি পাক, প্রকাশিত হউক।
তোমাদিগের গহীনে রহিয়াছে, আমার হাত।
কেবলই আমার...

- আমাদের ভেতর এটি আলো হোক।
আমাদের ভেতর এটি সত্য হোক।
আমাদের ভেতর এটি মুক্ত হোক।

১৭.০২.২০১৩


No comments: