কথক বলে যেতে থাকে...
কি বিচিত্র এই সময়?
সব ঋতু... ধাতু... বিজ্ঞান...
বাতাস... ধারা... জল...
নিয়ত অনিত্য সব...
কি পরিবর্তনীয় হায়!
অনিত্য এ জগতে...
তবু আমরা মূর্খ।
খুঁজতে থাকি কেবল
নিত্য এবং নিত্য সত্ত্ব।
সত্য সত্ত্ব সব মৃত।
সে মৃতই তাহলে নিত্য।
কি বিচিত্র! বলেন কথক...
আমরাতো কেবল অনুষঙ্গ।
সমস্ত অনিত্যকে নিত্যে
প্রীত হতে আদিষ্ট হই।
আমরা জন্মাই। ঠিক...
তৃণগুল্মের মতোই অথবা প্রাণ।
আমাদের জন্মদাত্রীরা
তীব্র সুখে সুখী হন।
কিন্তু কেউ দুঃখী হয়।
আমরা বড় হই... আরো বড়...
যতোটা বড় হলে,
আমরা ঢেকে দিতে পারি...
এই শুন্য আকাশ এবং শুন্যতা।
শুন্য আকাশও গর্বিত হয়...
আমাদের উদ্ধত আচরনে।
আমরা লঙ্ঘন করি,
হিমালয়... অথবা বুদ্ধ...
আমরা বিচিত্র হই...
আমরা প্রীত হই...
স্বপ্ন-কল্পনা-চিন্তায়,
নিমগ্ন হয়ে পথ চলি।
আমরা শিখতে থাকি।
শিখতে শিখতে ভাবি,
বাহ্ বেশ তো হলো!
আমরা দৃষ্টি দেই
গভীরে... আরো গভীরে...
দেখি প্রবাহিত নীল জল...
দুঃখের উৎপত্তিস্থল...
আমরা বারবার ভঙ্গ হই।
আমাদের স্বপ্ন... আশা... আলো...
যাবতীয় অনিত্য...
চাপিয়ে দেয়া হয়।
বলে এই নিত্য...
সুতরাং নিত্য সকল,
ঘাড়ে নিয়ে ঘুরে বেড়াও।
আমরাও ভারবাহী জন্তু...
নিত্যে বিশেষ বিজ্ঞ বিশ্বাসী।
কোনো প্রশ্ন এলে... চুপ।
কোনো ভাবনা এলে... চুপ।
জগত পেয়ালা ভর্তি কেবল...
সত্ত্ব সত্য! বলেন কথক।
একসাথে পথ চলে,
বিরামহীন এইখানে,
একইভাবে... একই রকম...
শত সত্য। শত সত্ত্ব সত্য।
বেদ... বাইবেল... কোরান...
এবং আরো অনেক অনিত্য...
আমাদের স্বীকার্য অবশ্য।
বললেন কথক- বলো কেনো দুঃখী?
আমরা বিস্মৃত হই।
দুঃখ... কারন... বিনাশ...
নির্বান...
জগত দুঃখ ময়। প্রমাণসাপেক্ষ...
জন্ম থেকে মৃত্যু... এর ভেতরে...
এর এরও ভেতরে... আরোও গভীরে...
গভীরেরও গভীরে... শেষ তলদেশে...
আমরা খুঁজি... কেনো?
কেনো এতো আশাভঙ্গের পরেও,
আমাদের আশা করতে হবে?
আমরা কেনো, সকল অনিত্যকে...
এক কথায়, মাত্র এক বাক্যে...
নিত্যে স্বীকার যাবো? চুপ।
জগতস্বামী গোস্বা যাবেন!
দুঃখ আছে। কারন আছে।
দুঃখ স্কন্ধময়। স্কন্ধ কি?
বলা হয়, এই যে উপাদান...
কারক, কৃত উপাদান সমূহ...
যা প্রতীত্য সমুৎপন্ন...
তাই স্কন্ধ।
রূপ, বেদনা, বিজ্ঞান, সংজ্ঞা
এবং সংস্কার।
বলো, এক হতেই তো
অপরের উৎপত্তি। তাই...
এই সমুৎপাদ কারণ...
বিচিত্র বিতর্ক প্রায়।
কারণ থাকলে তবে তার,
বিনাশ হবে নিশ্চয়।
প্রমাণসাপেক্ষ এবং এই
ক্ষুদ্র কথা গুলোইতো সাক্ষী।
দর্শন দাও ভেতরে...
দেখো এবং জ্বালো...
সাধনা... অন্তর্শক্তি...
পশ্চাৎগমন বা উন্মুত্ত শয়ন...
বা হাহাকারী পদছাপ...
সম্যক সব সত্য, সত্ত্ব অনিত্য।
তবুও এটাই হলো মাত্র,
কারণের বিনাশ।
সাধনা বাক্য শব্দে অলঙ্কৃত...
উপাদান হেতু, বাদ বিতর্ক...
কতো সর্বজান্তা, বিতার্কিক...
হৃৎপিণ্ড চেপে ধরে...
হৃৎপিণ্ড চেপে ধরে...
গত হয়েছেন। কতো!
তবু মুক্তি মেলেনি।
মেলেনি সুগম পথ।
আজো কতো শব্দ,
রয় অধরা। কিভাবে সম্ভব?
উৎপত্তি...
জ্ঞান...
ক্ষণ...
প্রমাণ...
প্রতিজ্ঞা...
বিজ্ঞান...
উদাহরণ...
ধর্ম...
বিতর্ক...
অনিত্য...
প্রত্যয়...
আরো... আরো... আরো...
নির্বান কিভাবে সম্ভব?
১৯.১১.২০১১